শনিবার, ২৯ অক্টোবর, ২০১৬

আমায় দে মা পাগল করে

আমায় দে মা পাগল করে
আর কাজ নাই মা জ্ঞান বিচারে।
ব্রহ্মময়ী দে মা পাগল করে।।

ওমা তোমার প্রেমের সুরা, পান করি মাতোয়ারা,
ওমা ভক্তচিত্ত হরা ডুবাও প্রেমসাগরে।।

তোমার এ পাগলাগারদে, কেহ হাসে কে কাঁদে
কে নাচে আনন্দ ভরে,
ঈশা বুদ্ধ শ্রীচৈতন্য, ও মা প্রেমের ভরে অচৈতন্য
হায় কবে হব মা ধন্য, ও মা মিশে তার ভিতরে।।

আমি যদি ভুল করি মা


আমি যদি ভুল করি মা
তুই যেন গো করিস নে ভুল,
ফুলের খেলায় ভুলে গিয়ে মা
তুলিনি তোর পূজার  ফুল।।

মা, মিছে কাজে কাটানু যে দিন
বুঝিনিতো বেড়ে যাবে ঋন
আঁধারে করেছি জমা
আলোক রথের ওরা ভুল।।

মা ঘরের ভেতর ঘুরে ঘুরে
অবশ হল যে তনু মন
মনের ভেতর জুড়ে জুড়ে
বাজে তোর নাম অনুক্ষন।।

মা আমি শিশু তুই যে গো মা
অপরাধ করে নে ক্ষমা
জননী তো ঠেলে না পায়
সন্তান যদি হয় বাতুল।।

শিব নয় মার পদতলে, লোকে মিথ্যে কথা বলে

শিব নয় মার পদতলে, লোকে মিথ্যে কথা বলে
মূল কথা মার্ক-মুনী চ-ীতে লিখেছে খুলে।।

দৈত্য বেট ভ’মে পড়ে, মা দাঁড়িয়ে তার উপরে
মায়ের পাদস্পর্শে দানবদেহ, শিবরূপী হয় রণস্থলে।।

সতী হয়ে পতির বুকে, কে পা দিয়েছে কোন সে লোকে
না হয় দাস বলে দাও অভয়পদ, রামপ্রসাদের হৃদকমলে।।

শুক্রবার, ২৮ অক্টোবর, ২০১৬

যে হাতে তোর খড়গ রাজে সে হাত বাঁশি বাজিয়েছিল

যে হাতে তোর খড়গ রাজে সে হাত বাঁশি বাজিয়েছিল
তুই ভুলেছিস ভোলা এ শংকরী কিশোর যমুনা নাচিয়েছিল।

রক্ত জবা মুণ্ডমালা আজকে যখন কণ্ঠে আছে
সেথায় ছিল রাধার মালা রাই কিশোরী ছিল কাছে।
হৃদয় দেশের সোহাগ সাগর দূকুল প্রেমে ভাসিয়েছিল।

মনে কি পড়েনা তারা ছিলি কাদের নয়ন তারা (মা)
তোর মর্ম জ্বালা বাঁশির সুরে কলংকিনী হল কারা।।

আজযে চরণ রক্তজবা সাজিয়ে দেমা সর্বনাশী
সেই চরণ ধরেই সেঁধেছে কত ব্রজাঙ্গনা কাছে আসি।
শ্যামা রূপ তুই ধরলী শ্যামা সে সাজে কেমন সাজিয়েছিল।

শত নামে কত জনে ডাকে যে তোমায় দাও মা সারা।

শত নামে কত জনে ডাকে যে তোমায় দাও মা সারা।
বিপদ তারিণী হও বিপদে সবার তুমি যে তারা।।

ভূলোকে পূজিত তুমি তুমি ধুমাবতী
তুমি মাগো ধেয়ান তরে লক্ষ্মী স¦রস¦তী।
জয়ন্তী মংগলা কালী তুমি বসুধরা।।

কতরূপে কতভাবে তোমারেই জানি
শিবা তুমি সহচর ডমরুপানি।

নওগো নন্দিনী মাগো তুমি যে বগলা
মহাশক্তি রূপিনী মা তুমি যে কমলা
মুক্তি পাই মহানামে পাপী তাপী যারা।।

বৃহস্পতিবার, ২৭ অক্টোবর, ২০১৬

এবার তারা বাঁধব তোকে

এবার তারা বাঁধব তোকে,
মন দড়িতে পাক দিয়েছি
তোর ওপরে ভর করেছি।।

আমার যা কাজ করবি মা তুই, আমি শুধু চরণটা ছুই
থাকব বসি সুখ বিলাসে, ভবের তারা মা পেয়েছি
আমায় ছেড়ে যাবি কোথায়।।
তোর ওপরে ভর করেছি।।

মা গো তারা ব্রহ্মময়ী, দুঃখ বিঘè বিনাশিনী
তোর আশীষে ভেসে ভেসে, সংসার মায়া সব ভুলেছি
আমায় ছেড়ে যাবি কোথায়,
তোর ওপরে ভর করেছি।।


শনিবার, ২২ অক্টোবর, ২০১৬

নজরুল-শ্যামা-তুই পাষাণ গিরি’র মেয়ে হলি

তুই পাষাণ গিরির মেয়ে হলি পাষাণ ভালবাসিস বলে।
গলবে কি তোর পাষাণ হৃদয়, তপ্ত আমার নয়ন জলে।।

তুই বইয়ে নদী পিতার চোখে লুকিয়ে বেড়াস লোকে লোকে
তাই মহেশ্বর পায়না তোকে পড়ে মা তোর চরণ তলে।।

কোটি ভক্ত যোগী ঋষি ঠাই পেল না তোর চরণে
তাই ব্যথায় রাঙা তাদের হৃদয়, জবা হয়ে ফোটে বনে।।

আমি শুনেছি মা ভক্তি ভরে, মা বলে যে ডাকে তোরে
তুই ওমনি গলে অশ্রু লোরে ঠাঁই দিস তোর অভয় কোলে।।

শ্যামা-রাঙাজবা কে দিল তোর পায়

রাঙাজবা কে দিল তোর পায়, মুঠো মুঠো
দেনা মা সাধ হয়েছে পড়িয়ে দেনা মাথায় দুটো।।

মা বলে মা ডাকব তোরে, হাত তালি দিয়ে নাচব ঘুরে

দেখে তুই হাসবি কত, আবার বেঁধে দিবি মাথায় ঝুটো।।

শ্যামা-এত করে ডাকছি তারা

এত করে ডাকছি তারা, তবু সাড়া দিলিনা মা
ধুলো বালি ঝেড়ে আমায় কোলে তুলে নিলিনে মা।।

আকূল করা ডাকে আমার, খুললিনা তোর মনের দুয়ার
তবে কেন রাঙা হাতে অভয় মুদ্রা ধরিস শ্যামা।।

ভজন পূজন জানিনে মা, মা মা বলে শুধুই ডাকি
রাঙা চরণ শরণ করে তোর পায়ে মা পড়ে থাকি।।

করুণা তোর হয় মা যদি, পার করে দে ভব নদী

ওমা এ সংসারের মায়াজালে ঘোরাসনে আর মনোরমা।।

শ্যামা-এত গয়না বেটি কোথায় পেলি?

এত গয়না বেটি কোথায় পেলি?
শিঙ্গির উপর ধিঙ্গি হয়ে বাপের বাড়ি চলে এলি।।

অবস্থা তোর আছে জানা, ভাতের উপর নুন জোটেনা।
তবে এত নবাবী কেন মা পড়ে বেনারসী চেলি।।

শিব থাকে শ্মশান ঘাটে বুঝি ত্রিশুল দিয়ে সিঁধ কাটে মা
ভক্তের সঞ্চিত ধন তাই পড়ে বা বাহবা নিলি।।

ছেলে দুটোর নোলা ধরে, (মা )
এনেছিস মা এমন করে
এরা কি তোর সতিনপো মা
কোন গেঞ্জি দুটো কিনে দিলি
গয়নার আসল নকল যায়না জানা

বোধ হয় ওসব কেমিকেলি।।

শ্যামা-এ কেমন করুণা কালী বোঝা গেল না।

এ কেমন করুণা কালী বোঝা গেল না।
দূর্গা দূর্গা বলি যত, দুঃখ আমার ঘোচেনা মা।।

ভাবি তোমায় নিরবধি, দূর্গতি না ঘোচে যদি।
সদা শিব হয় মিথ্যাবাদী তার কথা কেউ শুনবে না মা।।

সন্তানে দৌরাত্ম করে সইতে হয় সব জননীরে
মন্দ বলে কোলে করে ফেলে দিতে পারে না।

চাইলে যদি কাঙাল বাঁচে, তাতে কি আর ক্ষতি আছে,

সম্ভুচন্দ্রের কুদিন ঘুচে সুদিন কি আর আসবে না মা।।

শ্যামা-ভাল ছিলাম জননীগো হরেরি ঘরে

মা....গো
ভাল ছিলাম জননীগো হরেরি ঘরে
কে বলে জামাই তব শ্মশানেতে বাস করে।।
হরেরি ঘরে।।

বড় ভালো ছিলাম জননীগো
রাজেন্দ্রানীর সুখে সেথায়।।
বড় ভালো ছিলাম জননীগো।

যে ঘরেতে বাস করি, বর্ণিতে নারি মাধুরী
নীল কান্ত আধিকরি কত রতèশোভা করে।
যেন কত রবি শশী উদয় হয়েছে আসি।
জানি নাই দিবানিশি কখন যাতায়াত করে।।

আমার ঘরের কথা কি বলব মা
কত কুবের যিনি রতèমণি, সে ঘর আমার উজ¦লিছে।।

করেন বটে বাগাড়াম¦, জামাই তব বিশ্বেশ্বর
ভষ্মমাখা কলেবর সদা শিরে করে।
সেই শিবের শ্রীচরণে, পারিজাত আভরনে
দেব রাজ একমনে মাথা নত করে।।

শিবের শ্রীচরণের দাসী আমি
কত জনমের কত সাধনায়, যার পদতলে স¦র্গ লুটায়
শিবের শ্রীচরণের দাসী আমি।।

ষড়ৈশ্বর্য্য আছে যার ভিক্ষা কি জীবি তার
নাবুঝে ভিখারী বলে হরে।
সত্য বটে সুরধুনী অগ্রজার সমান মানি
সে ধারা ভগিনী যিনি যতন করে।

অধিক যতন করে।।

শ্যামা-আজি শঙ্খে শঙ্খে মঙ্গল গাও

আজি শঙ্খে শঙ্খে মঙ্গল গাও, জননী এসেছে দ্বারে
সপ্ত সিন্ধু কল্লোল রোল বেজেছে সপ্ত তারে।।
ওগো জননী এসেছে দ্বারে।।

সুর সপ্তক তুলেছে তান সপ্ত ঋষির গানে
সপ্ত স¦র্গে দুন্ধুবি ঘোষে সপ্ত গ্রহের টানে।
অন্তরে আজ সপ্ত দলের নব জাগরণ সারে।।

সাত রাঙা রবি রামধনু হাতে বরণেরি বাণ হানে
সপ্ত কোটি সুসন্তান বিজয় মাল্য আনে।।

(এল) সপ্ত তীর্থ একি সাথ হয়ে হৃদি মন্দির দ্বারে,
তুলে নাও বুকে তারে।।

ওগো জননী এসেছে দ্বারে।।

শ্যামা-ভাবতে যদি সময় গেল

ভাবতে যদি সময় গেল ডাকতে পেলাম কই?
অভাজন বলে কি হায়, তোমার সেèহেরে যোগ্য নই?

বিষয়ের বিষ বাসনায়, ডুবে আছে কানায় কানায়
তুমি বিনা কি বা আপন কোন জগতে তবু রই।।

ক্ষমা করে নাওনা মোরে, তোমার পায়ের যোগ্য করে

অন্ধ হয়ে মায়ার ঘোরে, বিষম বোঝা শিরে বই।।

শ্যামা-মাগো মুছিয়ে দে মোর

মাগো মুছিয়ে দে মোর এ দুটি নয়ন মুছিয়ে দে সেèহ ভরে।।
নাম যদি তোর দুঃখ হরা, ছেলের কেন নয়ন ঝরে।।

যে রূপে তোর জগৎ আলো সে যদি হয় কালো
আমার ভুবন রূপের আলোয় হয় না কেন আলো।।

¦ালিয়ে দেবো, দূঃখের কালো শিখায় শিখায়
আমার ভূবন জ¦ালিয়ে দেবো।
¦ালবো আলো, আপন দুঃখের অগিè শিখায়
এই ভুবনে করব আলো।।

তোর পাদপদ্ম হতে যে মা সুধাবিন্দু ক্ষরে
সেই করুণা পাই যদি মা, দুঃখে কেবা ডরে।।

নজরুল-শ্যামা-কোথায় গেলি মাগো আমার

(মাগো) কোথায় গেলি মাগো আমার খেলনা দিয়ে ভুলিয়ে রেখে
শ্রান্ত আমি খেলে খেলে, এ সংসারের ধূলা মেখে।।

বলেছিলি সন্ধ্যা হলে ধূলা মুছে নিবি কোলে
ছেলেরে তুই গেলি ভুলে পাইনা সাড়া ডেকে ডেকে।।

একি খেলার পুতুল মাগো দিয়েছিলি মন ভোলাতে
আধেক তাহার হারিয়ে গেছে, আধেক ভাঙা রয়েছে হাতে।।

এ পুতুলও লাগছে মা ভার, তোর পুতুল তুই নে মা এবার

দিন ফুরালো নামলো আঁধার, ঘুম পাড়া মা আঁচল ঢেকে।।

নজরুল-শ্যামা-মাগো আমি মন্দমতী,

মাগো আমি মন্দমতী, তবু যে সন্তান তোরি।
পুত্র বেড়ায় কাঙ্গাল বেশে, মা যার ভুবনেশ্বরী।।

মা, তুই যে এত হানিস হেলা, তবু তোরেই ডাকি সারা বেলা
মার খেয়ে মার শিশুর মত, তোকেই আবার জড়িয়ে ধরি।।

মা হয়ে মা কেমন করে, কোল থেকে তোর দিলি ফেলে
কেন দিলি ধুলায় ফেলে, আমি এত মন্দ হতাম না গো।।
আমি এত মন্দ হতাম না তোর সেèহ সুধা পেলে পরে।

তোর পরে অভিমানে (মা), ও আমার দুচোখ যায় যেদিক পানে (মা)
আমি সেই দিকে তাই ধাই মা এখন মরণ বাঁচন ভয় না করি।।

শ্যামা-মন তুমি কৃষি কাজ জাননা

মন তুমি কৃষি কাজ জাননা, তুমি কৃষি কাজ জাননা।।
এমন মানব জমিন রইল পতিত, আবাদ করলে ফলতো সোনা।।

কালী নামে দাওরে বেড়া, ফসলে তসরূপ হবে না।
সে যে মুক্তকেশীর শক্ত বেড়া, তার কাছেতে যম ঘেঁষেনা।।

অদ্য কিংবা শতাব্দাতে বাজাপ্ত হবে জাননা
তাই আপনি এখন প্রাণপণে মন চুটিয়ে ফসল কেটে নে না।।

গুরুদত্ত বীজ রোপণ করে ভক্তি বারি সেচে দেওনা
তুই একলা যদি না পারিস মন রামপ্রসাদকে সঙ্গে নে না।।

শ্যামা-মাতোর কত রঙ্গ দেখবো বল

মাতোর কত রঙ্গ দেখবো বল
আর কত কাল সইবো এ ছল।।

কার তুই দিসমা ফেলে, কারে আবার নিস মা তুলে
এই ফেলা তোলার ভবের খেলা, সবি কি তোর দয়ার ফল।।

কখন মা রূপ দেখি তোর এলোকেশী সর্বনাসী
কখন মা নয়নে তোর, শাসন সেèহের অমল হাসি।।

জনমেতে তোরি কোলে, মরণেতেও নিস মা তুলে

মায়ের কোলে ঘুমায় ছেলে এই শান্তি মা কোথায় বল।।

শ্যামা-মা তোর চোখের কাজল সারা গায়ে মাখিয়ে দিল কে?

মা তোর চোখের কাজল সারা গায়ে মাখিয়ে দিল কে?
বল কে পরাল শ্মশান চিতার ওই ভষ¥ তিলকে।।

হাড়ের মালা কোথায় পেলি, যোগিনী সাজ সেজে এলি
মাতোর গৌরি নামটি (বলনা মাগো) বল হরে নিল কে?

দেখে যারে পায়ের শোভা, পা নয়তো যেন রক্তজবা ( মা গো)

এমন রূপের ডালি কে দেখেছে, এই সারা ত্রিলোকে।।

শ্যামা-মা আছেন আর আমি আছি

মা আছেন আর আমি আছি ভাবনা কি আর আছে আমার
আমি মায়ের হাতে খাই পড়ি, মা নিয়েছেন আমার ভার।।

পড়ে সংসার পাকে ঘোর বিপাকে যখন দেখি অন্ধকার
সেই ঘোর আঁধারে মা আমারে বাণী শোনায় বারে বার।।

এসে ছয় জনাতে একি সাথে পথ ভোলায় যে বারে বার
সে বিপথ হতে ধরে হাতে মা যে করিছেন উদ্ধার।।

আমি ভুলেও থাকি তবুও দেখি ভোলেনা মা একটিবার
এমন সেèহের আধার কে আছে আর মা যে আমার আমি মার।।

শ্যামা-কোন গুনে তুই গুণময়ীর পূজায় পেলি ঠাঁই

কোন গুনে তুই গুণময়ীর পূজায় পেলি ঠাঁই
ওরে রক্তজবা তোর সাধনার তুলনা যে নাই।।

তোর নাইকো মধু নাই পরিমল, তবু পেলি মার পদতল
রাঙা পায়ে সাজবে বলে, রাঙা হলি তাই।।

বাসনা মোর তোর সমতুল, হবো মায়ের প্রণামী ফুল

যেন জন্ম জন্ম মা অভয়ার অভয় চরণ পাই।।

শ্যামা-কালী কালী বল রসনা

কালী কালী বল রসনা, কালী কালী বল রসনা
কর পদ ধ্যান নামামৃত পান,
যদি হতে ত্রাণ থাকে বাসনা।।

ভাই বন্ধু সুত দ্বারা পরিজন,
সঙ্গের দোসর নহে কোন জন
দূরন্ত শমন বাঁধিবে যখন,
বিনে ওই চরণ কেহ কারোনা।।

দূর্গা নাম মুখে বল একবার,
সঙ্গের সম্বল দূর্গা নাম আমার
অনিত্য সংসার নাহি পারাবার,
সকলি অসার ভেবে দেখনা।।

গেল গেল কাল বিফলে গেল
দেখনা কালান্ত নিকটে এল
প্রসাদ বলে ভালো কালী কালী বলো,
দূর হবে সব যম যন্ত্রণা।।

শ্যামা-জেনেছি জেনেছি তারা

জেনেছি জেনেছি তারা, তুমি জানো ভোজের বাজি।
যে তোমায় যেভাবে ডাকে, তাতে তুমি হওমা রাজি।।

মগে বলে ভরা তারা, গড বলে ফিরিঙ্গি যারা
খোদা বলে ডাকে তোমায় মোগল পাঠান সৈয়দ কাজী।।

শাক্তে বলে তুমি শক্তি, শিব তুমি শৈবে ভক্তি
সরি বলে সূর্য তুমি বৈরাগী কয় রাধিকাজী।।
গানপত বলে গণেশ, যজ্ঞ বলে তুমি ধনেশ
শিল্পী বলে বিশ্বকর্মা, বদর বলে নায়ের মাঝি।।

শ্রীরাম দুলাল বলে বাজি নয় এ যেন ফলে

এক ব্রহ্ম দ্বিধা ভেবে মন আমার হয়েছে পাজি।।

শ্যামা-যতনে হৃদয়ে রেখো আদরিনী শ্যামা মাকে

যতনে হৃদয়ে রেখো আদরিনী শ্যামা মাকে
মন তুই দেখ আর আমি দেখি, আর যেন কেউ নাহি দেখে।।

কামাদিরে দিয়ে ফাঁকি, আয় মন বিরলে দেখি
রসনারে সঙ্গে রাখি, সে যেন মা বলে ডাকে।।

কুরুচি কুমন্ত্রী যত, নিকট হতে দিও নাকো
জ্ঞান নয়নকে প্রহরী রেখো, সে যেন সাবধানে থাকে।।

কমলাকান্তের মন, ভাই আমার এই নিবেদন

দরিদ্রে পাইলে রতন, সে কি অযতনে রাখে।।

নজরুল-শ্যামা-আমার হৃদকমল মঞ্চে দোলে

আমার হৃদকমল মঞ্চে দোলে করালবদনী শ্যামা
মন পবনে দুলাইছে (আমার) দিবস রজনী ওমা।।

ঈড়া পিঙ্গলা নামা, সুষুন্মা মনোরমা
তারি মধ্যে গাথা শ্যামা, ব্রহ্মসনাতনী উমা।।

আবীর রুধির তায় কি শোভা হয়েছে গায়
কাম আদি মোহ যায়, হেরিলে ওমনি ওমা।।

যে দেখেছে মায়ের দোল, সে পেয়েছে মায়ের কোল

রামপ্রসাদের এই বোল, ঢোল মারা বাণী ওমা।।

শ্যামা-দোষ কারো নয় গো মা।

দোষ কারো নয় গো মা।
আমি সখাত সলিলে ডুবে মরি শ্যামা।।
                   
আমার ধর্মাধর্ম হলো কোদন্ড স¦রূপ
পূণ্যক্ষেত্র মাঝে কাটিলাম কূপ।
সে কূপে বেরিল কাল রূপ জল
কালো মনোরমা।।

আমার কি হবে তারিণী, ত্রিগুণ ধারিণী
বিগুন করিছে স¦গুনে।
কিসে এ বারি নিবারি, ভেবে দাসরথী
অনিবার বারি নয়নে।।

আমার ছিল বারি কক্ষে ক্রমে এল বক্ষে
জীবনে জীবন মা কেমনে হয় রক্ষে
আছি তোর অপিক্ষে, দেমা মুক্তিভিক্ষে।

কটাক্ষেতে করি পার।।

শ্যামা-দেখি মা কেমন করে আমারে ছাড়াায়ে যাবা

দেখি মা কেমন করে আমারে ছাড়াায়ে যাবা
ছেলের হাতের কলা নয় মা, ফাঁকি দিয়ে কেড়ে খাবা।।

এমন পলান পলাইব মা খূঁজে খূঁজে নাহি পাবা
বৎস পাছে গাভী যেমন তেমনি পাছে পাছে যাবা।।

প্রসাদ বলে ফাঁকি ঝুকি, দিত পারো পেলে হাবা

আমায় যদি না কর মা শিব হবে তোমার বাবা।।

শ্যামা-দেমা আমায় রাজা করি

দেমা আমায় রাজা করি,
আর কাঙাল হয়ে থাকতে নারি।।

দন্ত অন্ত হলো গো মা, কেমনে চিবোই কলাই মুড়ি।
হালুয়া ভিন্ন দিন চলে না, বরং রাবড়ী হলে খেতে পারি।।

পেটের জ¦ালায় ভিক্ষা মেগে ফিরি লোকের বাড়ি বাড়ি,
চরণ যে মা আর চলেনা, দে না একখান মোটর গাড়ী।।

রাজাই যদি করিস মাগো, দিসনে যেন জমিদারী
খাজনা আদায় ভিষণ ল্যাটা কেমনে দেব কালেক্টারী।।

পাওনাদারে পাওনাদারে, আছে যে দুনিয়াভরি
আমায় রাজা করার আগে পাঠাস তাদের জমের বাড়ি।।

খালি পেটে বাতাস ঢুকে, কেবল ফুলে যাচ্ছে ভূড়ি

টাকা দিতে আকার ভুলে টাক দিলি মা কপাল জুড়ি।।